Blog

typography poster
Blog, Typography

মার্কেটিংয়ে টাইপোগ্রাফির গুরুত্ব

টাইপোগ্রাফি শব্দটা আমরা প্রায়ই শুনি। অনেকে মনে করেন, এটি শুধুই গ্রাফিক ডিজাইনের একটি ছোট উপাদান—ফন্ট বেছে নেওয়া, কিছু লেখা সুন্দর করে সাজানো, আর কিছু নয়। কিন্তু আমার জন্য টাইপোগ্রাফি তার চেয়েও অনেক বড় কিছু। এটি কেবল চোখে দেখা ডিজাইনের নয়, বরং মনের অনুভবের অংশ। টাইপোগ্রাফি এমন এক শিল্পমাধ্যম, যা শব্দ ছাড়াই কথা বলে। এটি এমন এক আত্মা, যা নীরব ভাষায় আমাদের চিন্তা, আবেগ, এবং দর্শনকে প্রকাশ করে। আমরা যখন কোনো ডিজাইন নিয়ে কাজ করি—হোক সেটা একটি ব্র্যান্ড লোগো, বইয়ের প্রচ্ছদ, কিংবা একটি পোস্টার—প্রথমেই ভাবি, কী বলতে চাই? কী অনুভব পৌঁছে দিতে চাই দর্শকের কাছে? আর সেখানেই আসে টাইপোগ্রাফি। অক্ষরের ধরন, ওজন, ছাঁদ, ফাঁকা জায়গাগুলো—সবকিছু মিলে গঠিত হয় এক ধরণের ভিজ্যুয়াল ভাষা, যা আমাদের মনের ভেতর একটা নির্দিষ্ট প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। একটা টাইপফেস হতে পারে শক্তিশালী ও আত্মবিশ্বাসী, আবার একটা হতে পারে কোমল ও ব্যক্তিগত। আবার কোনোটা হয়তো কৌতুকপূর্ণ, কোনোটা নিঃসঙ্গ, আর কোনোটা রাজনৈতিক। একটা পোস্টারে আপনি যত চমৎকার ছবি ব্যবহার করুন না কেন, যদি টাইপোগ্রাফি ঠিক না হয়, দর্শক থামে না। আবার শুধুমাত্র টাইপের মাধ্যমে এমন এক দৃঢ় প্রভাব ফেলা যায়, যার তুলনায় অন্য কিছু প্রায় অপ্রয়োজনীয় হয়ে যায়। আমি বহুবার দেখেছি, টাইপ কেবল একটি “ডিজাইন এলিমেন্ট” নয়—এটি হীরের মতো। এটিকে যথাযথভাবে ব্যবহার করতে পারলে এটি পুরো কাজের মান পাল্টে দিতে পারে। আমাদের বর্ণমালার প্রতিটি অক্ষরই নিজের একটা চরিত্র ধারণ করে, একটা ছন্দময় শরীর নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। সেই চরিত্রকে যখন আপনি ডিজাইনের ভেতর জীবন্ত করে তুলতে পারেন, তখনই জন্ম হয় একটি সত্যিকারের টাইপোগ্রাফিক কাজ। লিপিকলা টাইপ ফাউন্ড্রি তৈরির পেছনের বড় অনুপ্রেরণাই ছিল—বাংলা টাইপকে ডিজাইনের ভাষায় আরো শক্তিশালী করে তোলা। আমরা চেয়েছি এমন কিছু ফন্ট তৈরি করতে, যেগুলো কেবল কাজ চালানোর জন্য নয়, বরং একটি নির্দিষ্ট আবেগ ও দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশে সহায়ক হবে। আমাদের দ্রোহ ফন্টটি এখন গানের ভিডিও, কবিতার বই, ব্র্যান্ড লোগো, এবং রাজনৈতিক পোস্টারেও ব্যবহার হচ্ছে। এগুলো আমাদের বাংলা টাইপের প্রতি মানুষের আগ্রহের প্রমাণ দেয়। টাইপোগ্রাফি শুধু ডিজাইনের ব্যাপার নয়, এটি একটা মনস্তাত্ত্বিক অভিজ্ঞতা। দর্শক যখন কোনো লেখা পড়ে না, শুধু দেখে, তখনো সে অনেক কিছু অনুভব করে—এটাই টাইপোগ্রাফির শক্তি। ভালো টাইপোগ্রাফি পাঠকের চোখে নয়, মনেই প্রথম ছাপ ফেলে। মার্কেটিংয়ের দুনিয়ায় যেখানে প্রতিটি সেকেন্ড মূল্যবান, টাইপই সেই চুপচাপ অথচ কার্যকর যোদ্ধা, যে প্রথম ছাপ তৈরি করে দেয়। আপনি যদি একটি ব্র্যান্ড তৈরি করতে চান, তাহলে আপনার টাইপফেস হতে পারে সেই নীরব পরিচয়পত্র, যা বারবার মানুষকে মনে করিয়ে দেবে আপনি কে। শুধু প্রোডাক্ট বা লোগো নয়—আপনার ওয়েবসাইট, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট, বিজ্ঞাপন, এমনকি প্রিন্টেড প্যাকেজিং—সবকিছুতেই টাইপের ভূমিকাই সবচেয়ে বেশি।

Fonts

ভূমিকা – ক্যালিগ্রাফি, টাইপোগ্রাফি ও লেটারিং

হামীম কেফায়েত চীফ আর্টিস্ট, দৈনিক সময়ের আলো ভূমিকা ক্যালিগ্রাফি, টাইপোগ্রাফি ও লেটারিং আসলে, শিল্পকে এক ফ্রেমে বা নির্দিষ্ট কিছু বাক্যব্যয়ে সংজ্ঞায়িত করা সহজ না। আভিধানিক বা প্রচলিত অনেক সংজ্ঞা বা পরিচয় তার আছে, সবকিছুরই যেমন থাকে। তবে আমি, পরিচয়পর্বে না গিয়েও বলতে পারি— শিল্প ছাড়া জীবন চলে না। কখন কোন শিল্প এসে আমাদের জীবনে দোল দেয়, ছোঁয়া দেয়, আলো দেয়, অভয় দেয়-দিয়ে যাচ্ছে, সবসময় আমরা হয়তো সবাই বলে-কয়ে বোঝাতেও পারি না।অন্যদের কথামতো ধরে নিলাম, শিল্প মানবজীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। মানুষের সৃজনশীলতা, কল্পনাশক্তি এবং চিন্তাধারার বহিঃপ্রকাশকে শিল্প বলে বলাবলি করা হয়। শিল্পের জানা-অজানা ও আবিষ্কৃত-অনাবিষ্কৃত রহস্যময় জগতের তিনটি স্ফূরণ হচ্ছে- ক্যালিগ্রাফি, টাইপোগ্রাফি এবং লেটারিং। এই তিনটিকেই আমার কাছে মহাদ্বৈরথ বলে মনে হয়। অন্যদের কাছে অতোমহান না হলেও হতে পারে। তবে, আমার কাছে অনবদ্য, এই ত্রিরত্নের অনুষঙ্গে আমার দুই যুগের বেশী বা সিকিশতাব্দী কেটে গেলো বলে । … এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে মনে হচ্ছে— এই তিনটি বিষয়ই আমাদের জীবনে বৈভব ও বরাভয়ের মতো, যা শুধু শিল্পের মাধ্যম নয়, বরং ব্যবহারিক জীবন, ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং প্রযুক্তির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। তিনটির তিনটিই নান্দনিক সৌন্দর্যের প্রতীক । মানুষের সৌন্দর্যচর্চা, ইতিবোধ, আবেগ, যোগাযোগ এবং চিন্তার গভীরতাকেও ফুটিয়ে তোলে এই শিল্পাত্ৰয় । অদ্ভূত এক ব্যাপার, একটি অপরটির সঙ্গে এতো বেশি সংশ্লিষ্ট ও প্রাসঙ্গিক যে, তিনটি বিদ্যাকেই আগ্রহীদের জন্য এক মলাটে হাজির করেছেন অচিনপুরের এক তরুণ এইচ এম খালিদ। তার সম্পর্কে আমার একদমই জানাশোনা ছিলো না। সহযোদ্ধা কাজী যুবাইর মাহমুদ একদিন ‘ক্যালিগ্রাফি, টাইপোগ্রাফি ও লেটারিং’-এর পাণ্ডুলিপি আমার হাতে দিলো। নেড়েচেড়ে দেখে আমি থ হয়ে গেলাম— এতো বিশাল কাজ, এতোটা সংগোপনে বাংলা ভাষায় ঘটে গেলো, টেরই পেলাম না। প্রকাশের আগে পাণ্ডুলিপি সৌভাগ্যবানরাই হাতে পায়, নিজের কাছে এমনটাই মনে হলো। পরে একদিন শিল্পের প্রতিশ্রুতিশীল ও ক্ষ্যাপাটে কর্তা এইচ এম খালিদের সঙ্গে কাজী পরিচয় করিয়ে দিলো। সৃষ্টির সঙ্গে স্রষ্টার আকাশ-পাতাল তফাৎ। তার সঙ্গে হাত মেলানোর পর অসহায়বোধ করলাম— দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েও ক্যালিগ্রাফি, টাইপোগ্রাফি ও লেটারিং নিয়ে আমাদের মাস্টার ক্যাটাগরির কাজ আসলে শূন্যই। প্রজন্মের হাতে অথবা আগ্রহী নতুনদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য আমরা বিশেষ কিছুই করতে পারিনি, এই অভাব ও আফসোস একাই একহাতে পূরণ করেছেন এইচ এম খালিদ। তাকে নির্দ্বিধায় ‘প্রজন্মের মায়েস্ত্রো’ বলে আমি সম্বোধন করতেই পারি।যে কোনো বয়সের যারাই শিখতে চায়, বুঝতে চায়, অনুভব করতে চায়, গভীরে যেতে চায় ‘ক্যালিগ্রাফি, টাইপোগ্রাফি ও লেটারিং’-এর মতো ‘মাস্টারস্ট্রোক’ তারা হাতে পাচ্ছে। ২০২৫ সালের শুরুতেই এমন সুসংবাদ আর হয় না। কাজীকে ধন্যবাদ।একাডেমিক দুটো কথা বলে শেষ করছি— এইচ এম খালিদের বইটি শুধু একটি শেখার মাধ্যম নয়, বরং এটি বাংলাভাষায় একটি ঐতিহাসিক সংযোজন। যারা ক্যালিগ্রাফি শিখতে চান, টাইপোগ্রাফি শিখতে চান এবং লেটারিং শিখতে চান বা শিল্পের জগতে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে চান, তাদের জন্য এটি এক অনন্য সহায়ক । এটি বাংলাভাষায় এই শিল্পচর্চার জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। হামীম কেফায়েত চীফ আর্টিস্ট, দৈনিক সময়ের আলো ভূমিকা ক্যালিগ্রাফি, টাইপোগ্রাফি ও লেটারিং আসলে, শিল্পকে এক ফ্রেমে বা নির্দিষ্ট কিছু বাক্যব্যয়ে সংজ্ঞায়িত করা সহজ না। আভিধানিক বা প্রচলিত অনেক সংজ্ঞা বা পরিচয় তার আছে, সবকিছুরই যেমন থাকে। তবে আমি, পরিচয়পর্বে না গিয়েও বলতে পারি— শিল্প ছাড়া জীবন চলে না। কখন কোন শিল্প এসে আমাদের জীবনে দোল দেয়, ছোঁয়া দেয়, আলো দেয়, অভয় দেয়-দিয়ে যাচ্ছে, সবসময় আমরা হয়তো সবাই বলে-কয়ে বোঝাতেও পারি না।অন্যদের কথামতো ধরে নিলাম, শিল্প মানবজীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। মানুষের সৃজনশীলতা, কল্পনাশক্তি এবং চিন্তাধারার বহিঃপ্রকাশকে শিল্প বলে বলাবলি করা হয়। শিল্পের জানা-অজানা ও আবিষ্কৃত-অনাবিষ্কৃত রহস্যময় জগতের তিনটি স্ফূরণ হচ্ছে- ক্যালিগ্রাফি, টাইপোগ্রাফি এবং লেটারিং। এই তিনটিকেই আমার কাছে মহাদ্বৈরথ বলে মনে হয়। অন্যদের কাছে অতোমহান না হলেও হতে পারে। তবে, আমার কাছে অনবদ্য, এই ত্রিরত্নের অনুষঙ্গে আমার দুই যুগের বেশী বা সিকিশতাব্দী কেটে গেলো বলে । … এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে মনে হচ্ছে— এই তিনটি বিষয়ই আমাদের জীবনে বৈভব ও বরাভয়ের মতো, যা শুধু শিল্পের মাধ্যম নয়, বরং ব্যবহারিক জীবন, ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং প্রযুক্তির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। তিনটির তিনটিই নান্দনিক সৌন্দর্যের প্রতীক । মানুষের সৌন্দর্যচর্চা, ইতিবোধ, আবেগ, যোগাযোগ এবং চিন্তার গভীরতাকেও ফুটিয়ে তোলে এই শিল্পাত্ৰয় । অদ্ভূত এক ব্যাপার, একটি অপরটির সঙ্গে এতো বেশি সংশ্লিষ্ট ও প্রাসঙ্গিক যে, তিনটি বিদ্যাকেই আগ্রহীদের জন্য এক মলাটে হাজির করেছেন অচিনপুরের এক তরুণ এইচ এম খালিদ। তার সম্পর্কে আমার একদমই জানাশোনা ছিলো না। সহযোদ্ধা কাজী যুবাইর মাহমুদ একদিন ‘ক্যালিগ্রাফি, টাইপোগ্রাফি ও লেটারিং’-এর পাণ্ডুলিপি আমার হাতে দিলো। নেড়েচেড়ে দেখে আমি থ হয়ে গেলাম— এতো বড়ো কাজ, এতোটা সংগোপনে বাংলা ভাষায় ঘটে গেলো, টেরই পেলাম না। প্রকাশের আগে পাণ্ডুলিপি সৌভাগ্যবানরাই হাতে পায়, নিজের কাছে এমনটাই মনে হলো। পরে একদিন শিল্পের প্রতিশ্রুতিশীল ও ক্ষ্যাপাটে কর্তা এইচ এম খালিদের সঙ্গে কাজী পরিচয় করিয়ে দিলো। সৃষ্টির সঙ্গে স্রষ্টার আকাশ-পাতাল তফাৎ। তার সঙ্গে হাত মেলানোর পর অসহায়বোধ করলাম— দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েও ক্যালিগ্রাফি, টাইপোগ্রাফি ও লেটারিং নিয়ে আমাদের মাস্টার ক্যাটাগরির কাজ আসলে শূন্যই। প্রজন্মের হাতে অথবা আগ্রহী নতুনদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য আমরা বিশেষ কিছুই করতে পারিনি, এই অভাব ও আফসোস একাই একহাতে পূরণ করেছেন এইচ এম খালিদ। তাকে নির্দ্বিধায় ‘প্রজন্মের মায়েস্ত্রো’ বলে আমি সম্বোধন করতেই পারি।যে কোনো বয়সের যারাই শিখতে চায়, বুঝতে চায়, অনুভব করতে চায়, গভীরে যেতে চায় ‘ক্যালিগ্রাফি, টাইপোগ্রাফি ও লেটারিং’-এর মতো ‘মাস্টারস্ট্রোক’ তারা হাতে পাচ্ছে। ২০২৫ সালের শুরুতেই এমন সুসংবাদ আর হয় না। কাজীকে ধন্যবাদ।একাডেমিক দুটো কথা বলে শেষ করছি— এইচ এম খালিদের বইটি শুধু একটি শেখার মাধ্যম নয়, বরং এটি বাংলাভাষায় একটি ঐতিহাসিক সংযোজন। যারা ক্যালিগ্রাফি শিখতে চান, টাইপোগ্রাফি শিখতে চান এবং লেটারিং শিখতে চান বা শিল্পের জগতে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে চান, তাদের জন্য এটি এক অনন্য সহায়ক । এটি বাংলাভাষায় এই শিল্পচর্চার জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।

ক্যালিগ্রাফি, টাইপোগ্রাফি ও লেটারিং​ প্রকাশকের কথা Lipikola
Books

Publisher on Calligraphy Typography Lettering

ক্যালিগ্রাফি, টাইপোগ্রাফি এবং লেটারিং কেবল একটি শৈল্পিক ক্ষেত্রই নয়, বরং তা আমাদের সংস্কৃতি এবং সমাজের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।

Lipikola
Books

Writer on Calligraphy Typography Lettering

আপনি ডিজাইনার হলেও যদি কাজ না পান, তাহলে ভাবার সময় এসেছে। দেশে ডিজাইনারের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে, কিন্তু ভালো ডিজাইনার খুঁজে পাওয়া কঠিন। কারণ, অনেকেই একই বিষয়ে দক্ষ হয়ে ওঠেন, কিন্তু ডিজাইনের বিশাল জগতে থাকা অন্যান্য কাজের সুযোগগুলিকে গুরুত্ব দেন না। আপনার উচিত ভিন্ন কিছুতে দক্ষতা অর্জন করা। আপনি জেনে অবাক হবেন, যারা প্রচ্ছদ ডিজাইনার কিংবা লেটারিং আর্টিস্ট তাদের হাতে এতো কাজ থাকে যে তারা কাজ শেষ করতে হিমশিম খান।

Scroll to Top
Lipikola-Logo